News Head

» দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর ১৬ কোটির বেশি অবৈধ সম্পদ!

প্রকাশিত: 21. July. 2025 | Monday

 


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর ১৬ কোটির বেশি অবৈধ সম্পদ!

প্রভাবশালী ভাইয়ের ছত্রছায়ায় টেন্ডার সিন্ডিকেট, বদলির আদেশ ঠেকাতে তদবির

নিউজ ডেস্ক :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে প্রেষণে নিয়োজিত সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জালাল আহমেদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি চাকরির দশম গ্রেডে কর্মরত থাকা সত্ত্বেও তার নামে-বেনামে রয়েছে প্রায় ১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার সম্পদ।

সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ মে ২০২৫ তারিখে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাকে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় বদলি করা হয়। কিন্তু বদলির আদেশ ঠেকাতে তিনি নানামুখী তদবিরের পাশাপাশি একই দিনে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে ছুটির আবেদন জমা দেন।

প্রশ্নবিদ্ধ সম্পদের তালিকা

তদন্তসাপেক্ষে প্রাপ্ত তথ্যমতে, জালাল আহমেদের মালিকানায় রয়েছে:

  • খিলক্ষেত লেকসিটি কনকর্ডে ২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট – আনুমানিক মূল্য: ৩ কোটি টাকা
  • উত্তরা রুপায়ন সিটিতে ২২০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট – আনুমানিক মূল্য: ২.৫ কোটি টাকা
  • রাজউক পূর্বাচলে ৫ কাঠার একটি প্লট (রোড ৪০৩, প্লট ১৯) – আনুমানিক মূল্য: ৫ কোটি টাকা

    দ্রষ্টব্য: প্লটটি তার পিতার নামে ক্রয় করে পরে হেবা দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে অন্তর্ভুক্ত করেন।

  • পূর্বাচলের সেক্টর ৩-এ ১০ কাঠার রিসোর্টের আংশিক মালিকানা – আনুমানিক মূল্য: ১.৫ কোটি টাকা
  • খুলনার অভিজাত এলাকায় ৫ কাঠার প্লট – আনুমানিক মূল্য: ১.৫ কোটি টাকা
  • ব্যক্তিগত গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-৭-২০-০৭৬৩) – আনুমানিক মূল্য: ৩৫ লাখ টাকা
  • শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ – আনুমানিক মূল্য: ২ কোটি টাকা
  • স্ত্রীর নামে রয়েছে প্রায় ১০০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, আনুমানিক মূল্য: ১ কোটি টাকা

ভাইয়ের রাজনৈতিক প্রভাব ও টেন্ডার সিন্ডিকেট

জানা গেছে, জালাল আহমেদের বড় ভাই ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা। সাবেক সরকারের এক সময়কার প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব জনাব গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর ছত্রছায়ায় তিনি অধিদপ্তরে প্রভাব বিস্তার করেন।
প্রকল্প টেন্ডার বণ্টনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গড়ে তোলেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই প্রভাবেই সামান্য সময়ের মধ্যে তিনি এই বিপুল সম্পদের মালিক হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুদক অভিযোগ পেলেও অগ্রগতি নেই

উল্লেখযোগ্য যে, জনাব জালাল আহমেদের বিরুদ্ধে একাধিকবার দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দাখিল হলেও সেগুলোর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব নথি গায়েব করে ফেলা হয়েছে।

একজন ৩য় শ্রেণীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর পিতার নামে ৫ কোটি টাকার প্লট!

সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর দিক হচ্ছে, ৫ কোটি টাকার একটি পূর্বাচলের প্লট তার বিমান বাহিনীর তৃতীয় শ্রেণির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী পিতার নামে কেনা হয়েছে, যা পরবর্তীতে হেবা দলিলের মাধ্যমে তার নিজের নামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে…

সরকারি চাকরির সীমিত বেতনের একজন প্রকৌশলী কীভাবে অল্প সময়ের মধ্যে এমন আকাশচুম্বী সম্পদের মালিক হলেন, সেটি খতিয়ে দেখা এখন সময়ের দাবি।
জনস্বার্থে বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশপ্রেমিক নাগরিকরা।

এ বিষয়ে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও জনাব মোঃ জালাল আহমেদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

[hupso]